Close

শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৯

"যা কিছু করেছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করেছি" -প্রফেসর ডক্টর নাজমুদ্দিন এরবাকান


একজন প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী হিসেবে গড়ে ওঠা তুরস্কের ইসলামী আন্দোলনের প্রণেতা এবং সাবেক তার্কিশ প্রেসিডেন্ট হিসেবে খ্যাত সমগ্র মুসলিম উম্মাহর বুকে জায়গা করে নেয়া এক ব্যাক্তিত্বের নাম মুহম্মদ নাজমুদ্দিন এরবাকান। ৭০-৮০ এর দশকের দিকে তুরস্কের একের পর এক প্রজন্ম যখন তথাকথিত সেক্যুলারিজমের ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বেড়ে উঠছে,তিনিই সেই নেতা যিনি ইসলামের পতাকা হাতে সামনে এগিয়ে আসেন এক জিহাদের উদ্দেশ্যে। সেই জিহাদ নিঃসন্দেহে এক বিপ্লব সংঘটিত করেছিল যা আজও আধুনিক তুরস্কে বহমান। তাকে নিয়ে যতবারই পড়েছি,এখনও পড়ছি,ততবারই মুগ্ধ হয়েছি। অনেক ব্যাস্ততার মাঝে একটু ফুরসত পেয়ে তাকে নিয়ে কিছু লেখার মন:স্থির করলাম।

নাজমুদ্দিন এরবাকানের কর্মজীবন শুরু তৎকালীন জার্মানির সর্ববৃহৎ ইঞ্জিন ফ্যাক্টরি ডয়েজের লিওপার্ডো ট্যাংকের ইঞ্জিন বিষয়ক প্রধান ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। সেখানে কিছুকাল কাজ করার পর দেশে ফিরে আসেন এবং দেশে ফিরে স্থানীয়ভাবে ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গড়ে তোলেন 'গুমুশ মোটরস' নামক তুরস্কের সর্বপ্রথম ইঞ্জিন কোম্পানি। এটা ছিল তার জীবনে একটা অনেক বড় সংগ্রাম এবং এজন্য তিনি অভ্যন্তরীণ ইয়াহুদি লবির ষড়যন্ত্রের শিকার হন। যদিও চড়াই উতরাই পার করে এই কোম্পানিকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। ইঞ্জিন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার সময় তিনি দেখতে পান যে,দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাগণ যাতে কোনভাবেই অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য সরকারি আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এক অদৃশ্য হাতের ইশারায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের সাথে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে যাচ্ছে। এর অবসানের জন্য তিনি এই প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি সভাপতি হওয়ার পরপরই সেখানে সাম্য প্রতিষ্ঠার দিকে গুরুত্ব দেন যার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই রাজনৈতিক শক্তির বলে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি রাজনীতিতে আসার ঘোষণা দেন।

তুরস্কে ইসলামী আন্দোলনের পদযাত্রা শুরু হয় তারই রাজনৈতিক দল 'মিল্লি গুরুস' এর মাধ্যমে। তিনি বলতেন,'আমি রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত নই,জিহাদ দ্বারা প্রভাবিত'। মিল্লি গুরুস অর্থ হল জাতীয় ভিশন, এটি ছিল প্রতীকী শব্দ কারণ তুরস্কে ইসলামের নামে যে কোন ধরণের সংগঠন করা নিষিদ্ধ ছিল। যদিও তিনি মিল্লি গুরুস দ্বারা সমগ্র মুসলিম মিল্লাতের ভিশনকেই বুঝাতেন। মিল্লি গুরুসের অনেকগুলো উদ্দেশ্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল-
আধ্যাত্মিক উন্নতি,অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বিতা এবং অনুগত কামালিস্ট ইউনিয়নের বদলে সাম্যবাদী ইসলামী ইউনিয়ন গড়ে তোলা। মিল্লি গুরুস প্রতিষ্ঠা করার পর তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মিল্লি নিজাম পার্টি। কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক দলের রোষানলে পড়ে মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর নাম বদলিয়ে গঠন করেন মিল্লি সালামত পার্টি। এই দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করার অনুমতি পায় এবং এরবাকান হন উপ-প্রধানমন্ত্রী। তার এই কোয়ালিশন সরকারের সময় ৬ হাজার মুসলিমকে মুক্ত করে দেয়া থেকে শুরু করে সাইপ্রাসকে গ্রিস থেকে মুক্ত করে তার্কিশ সাইপ্রাস গঠন করা,নতুন করে মাদ্রাসা শিক্ষা চালু করা,ব্যাপক কোরআন কোর্স চালু করা,মাদ্রাসার ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া,বিশ্ববিখ্যাত আলেম বদিউজ্জামান সাইদ নূরসীর রিসালায়ে নূরের উপর থেকে নিষধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা,সকল প্রতিষ্ঠানে মসজিদ নির্মাণ করা এবং অশ্লীলতা বেহায়াপনা দূর করার লক্ষ্যে আইন করাসহ তিনি অনেক কাজ করেন। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮০তে তুরস্কের কোনিয়াতে কুদস দিবসের সমাবেশ পালনের অভিযোগে ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৮০ সালে সামরিক শাসকগণ ক্যু করে এই পার্টিকেও নিষিদ্ধ করে দেয়। এরবাকানকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ এবং তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। অবশেষে ৮৩ সালে তার উপর যুলুম নির্যাতনের অবসান হয় এবং জেল থেকে বেরিয়ে গঠন করেন রেফাহ পার্টি। একাধিকবার তার রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধের পর এই পার্টিই অনেকদিন সংগ্রামে টিকে থাকে। ৮৪ সালে রেফাহ পার্টিতে যোগদান করেন বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এবং সমগ্র বিশ্বের তুমুল জনপ্রিয় নেতা রেজেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান। ১৯৮৭ সালে গণভোট করে এরবাকানের উপর থেকে রাজনৈতিক নিষধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় তিনি আবারো পূর্ণাঙ্গভাবে রাজনীতিতে আসেন এবং রেফাহ পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন। তার সভাপতিত্ত্বে রেফাহ পার্টি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তারই ধারাবাহিকতায় ৯৪-তে এরদোয়ান রেফা পার্টি থেকে ইস্তাম্বুলের সিটি কর্পোরেশনে জয়লাভ করে। ১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনে তার দল জয়লাভ করে। কিন্তু এই সরকার মাত্র ১১ মাস ক্ষমতায় টিকতে পারে। পরবর্তীতে এক পোস্ট মর্ডাণ ক্যূ করে তাকে ক্ষমতাচ্যূত করা হয়। এরবাকান তার ১১ মাসের শাসনামলে ইসলামকে সমৃদ্ধ করার জন্য  একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তার মধ্যে সবথেকে বড় উদ্যোগ ছিল ৮টি মুসলিম দেশ নিয়ে D-8 সম্মেলন প্রতিষ্ঠা করা। এছাড়াও সুদের হার কমিয়ে আনা,সকলের বেতন বৃদ্ধি,শিল্পায়নে গতি ফিরিয়ে আনা এমন বেশ কিছু উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন। কিন্তু যখনই তিনি রাজনীতিতে একটু আলোর মুখ দেখতেন,তখন থেকেই তার পুনরায় সংগ্রামের প্রহর গোনা শুরু হয়ে যেত। এবার তাকে প্রতারণার মুখে পড়তে হয়। তার উক্ত সফলতায় সেক্যুলাররা রেফাহ পার্টিকে নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে সকল প্রকার প্রোপাগান্ডা চালায় ও তার পার্টি শরিয়ত কায়েম করবে এমন অযুহাতে তাকে সরানোর জন্য সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করে। এই অবস্থায় এরবাকান প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেয়ার ঘোষণা দেন,তবে শর্ত আরোপ করেন যে সে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিলে তার কোয়ালিশন পার্টির নেতা তানসু চিলারকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। কিন্তু সেক্যুলারিস্ট ও ইহুদিদের তৎকালীন ক্ষমতাসীন নেতা সোলায়মান দেমিরেল বিশ্বাসঘাতকতা করে মেসুদ ইলমাজকে প্রধানমন্ত্রী করে এবং রেফাহ পার্টিকে নিষিদ্ধ করার নীলনকশার চূড়ান্ত পদক্ষেপটি নেওয়া হয় এরবাকানকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে। এরপরে এরবাকান হুজার(শিক্ষকরুপে সম্বোধন করে হুজা বলত সবাই) রাজনৈতিক জীবনের পরিসর অল্প এবং কম গুরুত্বপূর্ণ। রেফাহ পার্টি নিষিদ্ধ হলে তারই দলের নেতা রেজাই কুতান ফাজিলত পার্টি গঠন করে যা '৯৯ এর নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে। ৯৬ সালে ২২% ভোট পেয়ে কোয়ালিশনে আসতে পারলেও '৯৯ সালের নির্বাচনে সেই হার তলানিতে গিয়ে ঠেকে।

 ১৯৯৯-২০০১ সাল ছিল সম্ভবত তুরস্কের সবচেয়ে বাজে রাজনৈতিক সময়। সেই সময়ই তুরস্ক ইউরোপের রুগ্ন দেশ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে কোয়ালিশনে থাকা দলগুলোর মধ্যকার কোন্দল, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ভূমিকম্পে দেশে টালমাটাল অবস্থা এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মতো সামর্থ্য ছিল না সরকারের। ২০০১ সালে এরবাকানের দলীয় নেতাদের মধ্যে মতানৈক্যের অভাব দেখা দেয়। দুইটি ধারার অনুসারীরা বিভক্ত হয়ে পড়ে। প্রবীণ নেতাসহ বেশ কিছু নেতারা গতানুগতিক প্রথা ধরে রাখার অনুসারী ছিল। তারা আবার নতুন নাম করে নতুন একটি দল গঠন করার চিন্তাভাবনা করছিলো। অপর দিকে নবীণ এবং প্রগতিশীল চিন্তাধারার নেতারা গত ২০-২৫ বছরের রাজনীতি পর্যালোচনা করে তাদের রাজনীতিতে ভিন্ন কিছু পলিসি ও বৈশিষ্ট্য আনার পক্ষপাতি ছিল। ট্রাডিশনাল ধারার নেতা ছিলেন এরবাকান এবং তাদের প্রবীণ অনুসারীরা। এবং নতুন ধারার অনুসারী ছিল এরবাকানেরই শিষ্য এরদোয়ান ও নতুন এবং উৎসাহী বেশ কিছু নেতা। যদিও তাদের মধ্যকার যেই মূল বিশ্বাস অর্থাৎ ইসলামপন্থী ও জিহাদের রাজনৈতিক আদর্শে কোন ছেদ পড়েনি। এরদোয়ান কনজারভেটিভ ডেমোক্রেসি আদর্শ সংযোজন করে একে পার্টি গঠন করেন এবং মূলধারার রাজনীতিতে এরবাকানের আদর্শ বহমান রাখেন। এরবাকান গঠন করেন সা'দাত পার্টি। ২০০২ সালের নির্বাচনে একে পার্টির ভূমিধস জয় হয়।আল্লাহর শুকরিয়া তখন থেকে এখনও পর্যন্ত এরদোয়ান সফলভাবে তাদের মিশন ও ভিশন চালু রাখতে সমর্থ হয়েছেন এবং আধুনিক তুরস্কে গণতন্ত্র ও কল্যাণকামী একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

একে পার্টির উত্তরোত্তর সফলতায় এরবাকানের রাজনৈতিক অবদান ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার আদর্শেরই জয় হয়েছে,তার আদর্শ পূর্ণতা পেয়েছে হোক তা তার শিষ্যের মাধ্যমে। আনুমানিক তার দীর্ঘ ৩০ বছরের সংগ্রামে তিনি যেভাবে তুরস্ক গঠন করতে চেয়েছিলেন বর্তমান তুরস্ক তেমনই হয়তোবা তার থেকেও সুন্দর। তার আদর্শ আজ প্রতিষ্ঠিত। শত ঘাত-প্রতিঘাতময় তার সংগ্রামী জীবন আমাদের এটাই শেখায় যে যতই বিপদ-বিপর্যয় আসুক,থেমে থাকা যাবে না। আল্লাহর কাছে সাহায্য ও শুকরিয়া আদায় করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে যতক্ষণ চিত্তে প্রাণ থাকবে।

তার কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১- আধ্যাত্মিক উন্নয়নকে সরকারী কাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিকরন
২- পুনরায় মাদ্রাসা স্থাপন
৩- ৫০০০ এর বেশী কুরআন কোর্স চালু করা
৪- সকল স্কুলে দ্বীন ও আখলাক দারস বাধ্যতামূলক করে দেওয়া
৫- মুসলিম দেশসমূহ থেকে পাশ করে আসা শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটের স্বীকৃতি দেওয়া। (বর্তমান সময়েও যা নাই। কয়েকটি দেশের সার্টিফিকেটকে এখনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না)
৬- তুরস্ককে ওআইসির অন্তর্ভুক্তিকরন
৭- ইসলামীক ডেভলেপমেন্ট ব্যাংক গঠনে অগ্রনী ভূমিকা পালন
৮- তুরস্কে সুদ মুক্ত ব্যাংক চালু করা (বর্তমানে যেখানে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় অবস্থিত)
৯- ভারী শিল্প কারখানা স্থাপন করা। ২৭০ টির বেশি ভারী শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
১০- নতুন বৃহৎ তুরস্কের পরিকল্পনা
১১- ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য জাতির সামনে ১০০ বছরের বিস্তারিত ভিশন পেশ করা।
১২- তুরস্ক এবং ইরানের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং ডলারের পরিবর্তে স্থানীয় মুদ্রা দিয়ে ব্যবসা শুরু করা।
১৩- বসনিয়াকে স্বাধীন করার জন্য মুজাহিদ বাহিনী প্রেরণ এবং সেখানে অত্যাধুনিক অস্ত্র কারখানা প্রতিষ্ঠা করা।
মিল্লি সালামেত ও রেফাহ পার্টির শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত কারখানা-
১৮ টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি,
১৬ টি সার-কারখানা,
১৪ টি চিনির ফ্যাক্টরি...
২৩ টি সুমের ব্যাংক ফ্যাক্টরি
৬ টি উদ্ভিদ ফ্যাক্টরী
৭৭ টি বৃহৎ শিল্প সেবা প্রতিষ্ঠান
৬৩ টি organized industrial Zone
২৫৩ টি ছোট শিল্প-কারখানা,
৩২ টি বৃহৎ মেশিনারী ফ্যাক্টরী
৪ টি নৌ কারখানা
১০ টি ইঞ্জিন ফ্যাক্টরী
১১ টি ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল শিল্প-কারখানা
৩ টি গবেষণা সেন্টার(প্রাকৃতিক সম্পদ)
৪ টি ইলেক্ট্রোনিক শিল্প-কারখানা এবং
সর্বশেষ Taksan প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা ছিলো “ফ্যাক্টরী বানানোর ফ্যাক্টরী।” মানে অন্যান্য ফ্যাক্টরী বানাতে হলে যা সরঞ্জাম লাগবে তা এই ফ্যাক্টরি সরবরাহ করবে।
এতো কম সময়ে এরকম উৎপাদন আর কেউ করে দেখাতে পারে নি তার্কির ইতিহাসে।

৮৫ বছর বয়সে ২০১১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারী সবাইকে কাঁদিয়ে মহান প্রভুর কাছে চলে যান মহান এই নেতা। তার জানাযায় এত পরিমাণে লোক হয়েছিল যে,তুরস্কের ৩০০০ বছরের ইতিহাসে এর আগে এত লোকের সমাগম হয় নি। অফিশিয়াল তথ্য মতে প্রায় ৩৫-৪০ লাখ লোকের সমাগম হয়েছিল তার জানাযায়। তিনি মৃত্যুর আগে বলেছিলেন,তার মৃত্যুর পর সরকার বিশেষ কোন সম্মানে যেন তাকে দাফন না করা হয়। অতঃপর তার দুই ছাত্র তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান এবং আব্দুল্লাহ গুল লাশের খাটিয়া ধরে তার লাশ বহন করেন এবং সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে ভূষিত করা হয়।

তথ্যসূত্র: দাওয়াম:আমার সংগ্রাম; প্রফেসর ডক্টর নাজমুদ্দিন এরবাকান ও উইকিপিডিয়া