Close

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বইনোট : চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান || লেখক : নঈম সিদ্দিকী


চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান

নঈম সিদ্দিকী


লেখক পরিচিতি:

নঈম সিদ্দিকী, প্রসিদ্ধ ইসলামী সাহিত্যিক। মাসিক তরজমানুল কুরআন এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত "চেরাগে রাহ" পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। রাসূল (সা.) এর সীরাত "মুহসিনে ইনসানিয়্যাত" নামক গ্রন্থটি (অনুবাদঃ- মানবতার বন্ধু মুহাম্মদ সাঃ) প্রণয়ন করেন। এ বইয়ের মূল নাম ছিল 'তামীরে সীরাত কে লাওয়াযিম'।


চরিত্র: আচার, আচরণ, স্বভাব-প্রকৃতি, ব্যবহারবিধি, রীতিনীতি, কায়দাকানুন অর্থাৎ যা দ্বারা মানুষের ভালমন্দ বিচার করা যায় তাকে চরিত্র বলে।

ইসলামী সমাজ বিপ্লবের লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলনে কর্মীদের চরিত্রই মুখ্য হাতিয়ার।



বইটি চার ভাগে বিভক্ত :


১. ভূমিকা


২. আল্লাহর সাথে যথাযথ সম্পর্ক


৩. সংগঠনের সাথে যথাযথ সম্পর্ক


৪. সহযোগীদের সাথে যথাযথ সম্পর্ক।



ভূমিকাঃ-

মানুষের তৎপরতা যত বৃদ্ধি পায়, শয়তানের হস্তক্ষেপও ততই ব্যাপকতর হতে থাকে।


শয়তানী তৎপরতার রুপঃ


* পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ও স্বার্থপুজারী সভ্যতা জাতির নৈতিক পতনকে চরম পর্যায়ে উপনীত করেছে


* সমাজতন্ত্রের নাস্তিক্যবাদী চিন্তার হামলা জাতির মৌলিক ঈমান আকীদার মধ্যে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করেছে।


এটি যেন সূরা আরাফের ১৭ নং আয়াতে বর্ণিত শয়তানের চ্যালেঞ্জেরই বাস্তবরুপঃ


" আমি (হামলা করার জন্য) এদের (মানব জাতির) সামনে থেকে পেছন থেকে, ডান দিক থেকে বাম দিক থেকে আসবো।"


. এ অবস্থায় বৈরাগ্যবাদী চিল্লার কিছু মুসলমান আত্মরক্ষার উপদেশ দান করে, যদিও নৈতিক উচ্ছৃঙ্খল পরিবেশে উন্নত নৈতিক বৃত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা চাট্টিখানি কথা নয়। তবুও তা যথেষ্ট নয়-


উদাহারণঃ-


১. মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে আত্মরক্ষার্থে পলায়ন করা স্বার্থপরতার শামীল।


২. নূন্যতম পুজি হলেও তা নিয়ে ময়দানে নামা


৩. চরিত্রের মূলধনকে অনুৎপাদক না রেখে বাজারে ছেড়ে দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে? এর পরিচালনা ও দেখাশুনার জন্য যাবতীয় উপায় অবলম্বন করা উচিত। মহামারি আক্রান্ত এলাকায় জনগণের সেবা করার জন্য আমাদের নিজেদের স্বার্থরক্ষার সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।"


আল্লাহর সাথে যথাযথ সম্পর্ক: উপায় ৪টি


১. পূর্ণ নিয়মানুবর্তিতা এবং আল্লাহভীতি, নত ও বিনম্ন ভাবসহ মৌলিক ইবাদত সমূহ পালন- বিশেষ করে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামায়াতের সাথে আদায় করতে হবে। ইবাদাতের সাথে সাথে আত্মাবিচারে অভ্যস্ত হতে হবে।


২ . কোরআন ও হাদীস সরাসরি অধ্যয়ন, সাথে ইসলামী সাহিত্যও অধ্যয়ন করতে হবে।


৩. নফল ইবাদত-নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ), নফল রোজা, আল্লাহরপথে অর্থ ব্যয় এক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা করা।


৪. সার্বক্ষণিক যিকির ও দোয়া।


সংগঠনের সাথে সম্পর্ক


আমাদের নিকট সংগঠন কেবল একটি স্বাভাবিক প্রয়োজনই নয় বরং আমাদের দ্বীনদারী, নৈতিকতা, আল্লাহর ইবাদত ও রাসূলের আনুগত্যের মূর্তপ্রকাশ।


১. আদেশ আনুগত্যের ভারসাম্য রক্ষা করা। (নিসা-৫৮)


২. অন্ধ আনুগত্য না করা। (মায়েদা-২)


৩. সমালোচনা সুধারণার ভিত্তিতে


৪. ব্যক্তির পরিবর্তনে আনুগত্যের পরিবর্তন না করা। (ইমরান-১৪৪)


৫. কর্মীদের তুলনায় কর্তৃত্বশীলদের দায়িত্ব অনেক বেশী নাজুক প্রকৃতির।


(ক) কোন ভেদাভেদ না করা


(গ) মাফ করে দেয়া সংশোধন করা ও তাদের জন্য দোয়া করা


(গ) বিভিন্ন বিষয়ে কর্মীদের সাথে পরামর্শ করা। (ইমরান-১৫৯)


(ঘ) স্থির সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর তার উপর একাগ্রচিত্তে অটল থাকা।


৫. (ক) চিঠি সার্কুলারকে গুরুত্ব দান


(খ) সময়মত বৈঠকে হাজির হওয়া


(গ) আল্লাহরকাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি নিয়ে কাজ করা। দলীয় চরিত্রে দুর্বলতার প্রকাশ বৃহত্তর গোনাহ এ অনুভূতি নিয়ে কাজ করা।


(ঘ) দায়িত্বানুভূতি নিয়ে কাজ করা। (আল্লাহরনিকট অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করা)।


সহযোগীদের সাথে যথাযথ সম্পর্ক: ৮টি


১. ফাসেক সংবাদ-বাহকের সংবাদে তড়িৎ সিদ্ধান্ত না নেয়া। বরং অনুসন্ধান করা। (হুজুরাত-৬)


২. ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। (হুজুরাত-১০)


৩. কাউকে বিদ্রূপ না করা।


৪. পরস্পরের সম্পর্কে কুধারণা না করা, অবস্থা জানবার জন্য গোয়েন্দাগিরি না করা, গীবত না করা। (হুজুরাত-১২)


-সংকলিত