Close

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

দারসুল হাদিস || হযরত ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত হাশরের ময়দানে পাঁচটি প্রশ্নের জবাবদিহি সংক্রান্ত হাদিস (তিরমিজি : ইফা-২৪১৯)

দারসুল হাদিস || হযরত ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত হাশরের ময়দানে পাঁচটি প্রশ্নের জবাবদিহি সংক্রান্ত হাদিস (তিরমিজি : ইফা-২৪১৯)


দারসুল হাদিস || পরকালের জবাবদিহি সংক্রান্ত হাদিস

• আরবি ইবারত:
عَنِ بْنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تَزُولُ قَدَمَا ابْنِ آدَمَ حَتَّى يَسْئَلَ عَنْ خَمْسٍ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلَاهُ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَ عَمِلَ فِيْمَا عَلِمَ (ترمذ ی)

• বাংলা অনুবাদ:
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) রাসূলে করীম (সা) হতে বর্ণনা করেছেনঃ কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এক কদমও (স্ব-স্থান হতে) নড়তে দেয়া হবে না। (১) তাঁরজীবনকাল কিতাবে অতিবাহিত করেছে। (২) যৌবনের সময়টাকে কিভাবে ব্যয় করেছে। (৩) ধন-সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে। (৪) তা কোনপথে ব্যয় করেছে। এবং (৫) সে দ্বীনের যতটুকু জ্ঞানার্জন করেছে সে অনুযায়ী আমল করেছে কিনা। (তিরমিযি)

• শব্দার্থ:
لاتزلُ - নাড়াতে পারবে না। পদদ্বয়। ابن ادم - আদম সন্তান। حَتَّى - যতক্ষণ। يَسْتَلُ - জিজ্ঞাসা করবে। عَنْ خَمْسٍ - পাঁচটি বিষয়ে। عمره -তার জীবন। أَقْنَاهُ ধ্বংস করেছে, ব্যয় করেছে। شبابه তার যৌবনকাল। آبده (এখানে) সে কিভাবে কাটিয়েছে। এ তার ধন-সম্পদ। اَيْن -কোথায়। اكتسبه সে উপার্জন করেছে। اين কোনখানে। انفقه সে ব্যয় করেছে। عمل আমল করেছে, কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। علم - সে শিখেছে।

• রাবীর পরিচয়:
"ইসলাম প্রচারের প্রাথমিক অবস্থায় যে কজন মুসলমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) ছিলেন তাঁদের একজন। তিনি আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন এবং নবী করীম (সা) এর মদীনায় হিজরতের পর মদীনায় চলে আসেন। তিনি সর্বদা রাসূলুল্লাহ (সা) এর খেদমতে নিয়োজিত থাকতেন এবং ছায়ার মতো তাঁকে অনুসরণ করতেন। আবু মুসা আশায়ারী (রা) বলেন, "আমার ইয়েমেন হতে এসে বহুদিন পর্যন্ত ইবনে মাসউদ (রা) কে নবী পরিবারের লোক বলে ধারণা করতাম।"

হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা) একজন বিজ্ঞ আলেম ছিলেন। তিনি কুরআন, হাদীস, ফেকাহ ইত্যাদি সব বিষয়েই সমান পারদর্শী ছিলেন। মদীনায় যে কজন সাহাবী ফতোয়া দিতেন তিনি ছিলেন তাঁদের অন্যতম। কুরআন শিক্ষায় তিনি ছিলেন বিশেষ পারদর্শী। নবী করীম (সা) বলেনঃ "কুরআন শরীফ যেভাবে নাযিল হয়েছে হুবুহু সেভাবে যদি কেউ পড়তে চায় সে যেনো আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) এর নিকট যায়।"

এই জনের বিশাল মহীরুহ হিজরী ৩২ সনে মদীনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা মোট ৮৪৮টি। ইমাম বুখারী ও মুসলিমের ঐকমত্যের হাদীস ৬৪টি, তাছাড়া বুখারী ২১৫টি এবং মুসলিম ৩৫টি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

• হাদীসটির গুরুত্ব:
আলোচ্য হাদীসে মানুষের নৈতিক চরিত্রের সংশোধনকল্পে আখিরাতের জবাবদিহির অনুভূতি জাগ্রত করার প্রয়াস পেয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের মধ্যে খোদাভীতি ও পরকালে জাবাদিহির অনুভূতি জাগ্রত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নৈতিক চরিত্রের সংশোধনের আশা করা বৃথা। কারণ আমাদের এ জীবনের পর অনন্তকালের এক জীবন আছে এবং সে জীবনের সাফল্য এবং ব্যর্থতা সম্পূর্নরূপে নির্ভর করে এ জীবনের কর্মফলের উপর; আর প্রতিটি কর্মেরই সূক্ষ্মভাবে বিচার -বিশ্লেষণ করা হবে। একমাত্র এ অনুভূতিই মানুষকে মহৎ হতে বাধ্য করে।

তাছাড়া পার্থিব জীবনের আচার-আচরণ সম্বন্ধেও ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে এ হাদীসের মধ্যে। তাই প্রতিটি মুসলমানের জীবনে এ হাদীসটির গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

• ব্যাখ্যা:
★১.
মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে শুধমাত্র আল্লাহর ইবাদতের জন্য। যেমন কুরআনে বলা হয়েছেঃ
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ 
"আমি মানুষ আর জ্বীনকে শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।"
(সূরা আয যারিয়াতঃ ৫৬)

ইবাদাত করতে প্রতিটি মানুষ অথবা জ্বীনকে জন্ম হতে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর দাসত্ব বা গোলামী করার কথা বলা হয়েছে। কারণ "ইয়াবুদুন" শব্দটি "আবদুন হতে নির্গত। আর "আবদুন" শব্দের অর্থ হল গোলাম দাস। কাজেই দাসত্ব বা গোলামী জীবনের কোন একটি সময় বা মুহূর্ত পর্যন্ত সীমিত নয় বরং সমস্ত জীবনব্যাপী এ দায়িত্ব।
অন্যত্র বলা হয়েছেঃ
أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَ أَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ . (المؤمنون)
"তোমরা কি মনে করেছো যে, আমরা তোমাদেরকে অকারণেই সৃষ্টি করেছি, আর তোমাদেরকে কখনই আমার নিকট ফিরে আসতে হবে না? (সূরা আল মু'মিনুন-১১৫)

তাই দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর চাকচিক্যময় প্রতিটি বস্তু মানুষের পরীক্ষার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। আর এ পরীক্ষার সফলতা বা ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করেই শুরু হবে পরকালের জীবন। সত্যি কথা বলতে কি, ছোট্ট একটি প্রশ্নের উত্তর সমস্ত জীবনব্যাপী বিস্তৃত।

★২. প্রতিটি বস্তুরই একটি উৎকৃষ্ট অংশ থাকে আর জীবনের উৎকৃষ্ট অংশ হচ্ছে তার যৌবনকাল। নিম্নোক্ত চারটি গুণের পরিপূর্ণ সমাবেশ ঘটে এ যৌবকালেই। যথা-

(ক) চিন্তাশক্তি (Thinking Power)
(খ) ইচ্ছাশক্তি (Will Power)
(গ) মনন শক্তি (Power of soul)
(ঘ) কর্মশক্তি (Physical strength for working capacity)

অতএব দেখা যাচ্ছে ভালো অথবা মন্দ যে কাজই করা হোকনা কেন যৌবনই তার প্রধান উদ্যোক্তা। কারণ মানুষ চুরি, ডাকাতি, জুলুম, নির্যাতন, অহংকার, ব্যাভিচার ইত্যাদি সবকিছুই করে যৌবনকালে। দেখা যায় যৌবনে দুর্ধর্ষ এক লোক বার্ধক্যের কষাঘাতে নেহায়েত গো-বেচারায় রূপান্তরিত হয়। কারণ বার্ধক্য মানুষকে নিরীহ অসহায় করে দেয়। তাই বার্ধক্যে যেমন অন্যায় অত্যাচারের পথ রুদ্ধ হয় তদ্রুপ যতো সৎ নিয়ত এবং চেষ্টাই থাক না কেন বার্থক্য আসার পর কোন একটি ভালো কাজও সুচারুভাবে সমাপ্ত করা যায় না। এখানেও বার্ধক্য তার প্রধান অন্তরায়। এজন্য যৌবনের এতো গুরুত্ব।

হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ
اغْتَنِمْ خَمْسًا شَبَابِكَ قَبْلَ هَرَمِكَ 
পাঁচটি বস্তুকে গনীমতের মালের মতোই মনে করো। তার একটি হলো বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনের। (মিশকাত)

অনেকেই মনে করে যৌবনে যা কিছু মনে চায় করে বার্ধক্য পর আল্লাহ্র নিকট তওবা করে সৎ কাজে মনোনিবেশ করবো। এ ধারণাই মানুষকে স্বৈরাচারী করে তোলে। তাই হাদীসে এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। এইজন্যই পরকালের প্রশ্নবলীর মধ্যে যৌবন সংক্রান্ত প্রশ্নটি তার অন্যতম।

★৩. মানুষ পৃথিবীতে ভোগের জন্য সর্বদা পাগলপারা। তার একটা লক্ষ্য ধন- সম্পদের স্তূপে সুখের সন্ধান করা। এজন্য চুরি, ডাকাতি, অপরের সম্পদ হরণ, অথবা ধোকাবাজী যা কিছুই হোক না কেন তাতে কোন পরওয়া নেই। আর এভাবে যদি কোন সমাজ চলে তবে সে সমাজের ধ্বংস অনিবার্য। তাই বিশ্বপ্রভু সমাজের ভারসাম্য বজায় রেখে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সমাজ কায়েমের লক্ষ্যে ধন-সম্পদ আয় এবং তার ব্যয়ের মধ্যেও শর্তারোপ করেছেন, যাতে সমাজের কারো কোন অধিকার নষ্ট না হয় এবং সকলেই সমভাবে সম্পদ ভোগ করতে পারে। নিম্নে সম্পদ উপার্জনের মৌলিক বিধি-নিষেধ সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো।

(১) কারো অধিকার নষ্ট করে সম্পদ উপার্জন করা যাবে না। যেমন মিরাসের অংশ না দিয়ে অথবা মোহরের প্রাপ্য টাকা না দিয়ে নিজে ভোগ করা। এতিমের মাল ভোগ করা ইত্যাদি।
(২) ব্যাভিচার বা কোন প্রকার দেহ ব্যবসার মাধ্যমেও সম্পদ উপার্জন করা যাবেনা।
(৩), চুরি, ডাকাতি, লুণ্ঠন, হত্যা ইত্যাদির মাধ্যমেও জীবিকার্জন বা সম্পদ অর্জন করা যাবে না।
(৪) কাউকে ধোকা দিয়ে বা ঠকিয়ে ধন সম্পদ অর্জন করা যাবে না।
(৫) গান-বাজনা, অভিনয় ইত্যাদিকেও জীবিকার পেশা নির্ধারণ করা যাবে না।
(৬) হারাম মালের দ্বারা ব্যবসার মাধ্যমে। এমন কি হালাল পশু পাখীর মৃতদেহও এর অন্তর্ভুক্ত।
(৭) হালাল মালের ব্যবসা করলেও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী মূল্য বৃদ্ধির নিয়তে ৪০ দিনের অধিক জমা রেখে ঐ মুনাফালব্ধ টাকার মাধ্যমে।
(৮) সুদ অথবা ঘুষের মাধ্যমে সম্পদ আহরণ বা বর্ধিত করা যাবে না।
(৯) জুয়া, হাউজি, ভাগ্যগণনা, লটারী ইত্যাদির মাধ্যমেও সম্পদ উপার্জন করা যাবেনা।
(১০) কোন পশু পাখীর দ্বারা খেলা দেখিয়ে।
(১১) মূর্তি অথবা প্রাণীর ছবির ব্যবসায়ের মাধ্যমেও সম্পদ অর্জন করা না জায়েজ।
(১২) ওজনে কম দেয়া। ইত্যাদি।


★৪. উপরের বিধি নিধেগুলো সামনে রেখে উপার্জন করতে হবে। 

ব্যয়ের মৌলিক খাতসমূহ নিম্নে দেয়া হলো:
(১) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রয়োজনে ব্যয় করার অবাধ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে কিন্তু শর্তারোপ করা হয়েছে অপচয় করা যাবে না।
(২) নেছাবের মালিক হলে যাকাত দিতে হবে।
(৩) ছদকাহ্।
(৪) 'নিকটাত্মীয়ের হক।
(৫) ইয়াতিমের হক।
(৬) মিসকিন, ভিক্ষুকের হক।
(৭) আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ব্যয় "জিহাদ ফি ছাবিলিল্লাহ"।
(৮) বিভিন্ন ধরনের কাফফারা আদায়কল্পে।
(৯) পথিক বা পর্যটকদের হক।

বস্তুতঃ প্রত্যেকটি বনী আদমকেই প্রশ্ন করা হবে যে, উপরোক্ত শর্তবলী পালন করেই সে সম্পদ আয় এবং ব্যয় করেছে কিনা?

★৫. বিশ্ববাসীকে লক্ষ্য করে রাসূলে আকরাম (সা) এর মাধ্যমে আল্লাহ'রাব্বুল আলামীনের প্রথম ফরমান- হলো:

اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ (علق) -
"পড় তোমার সেই প্রভুর নামে যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।" (সূরা আলাকঃ১)

আয়াতে কারীমার তাৎপর্য হলো রবকে জানা বা বুঝার উদ্দেশ্যে পড়তে হবে। অন্য কথায় দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। মহানবী (সা) বলেছেনঃ
طلب العلمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ -
"মুসলমান প্রতিটি নর-নারীর উপর (দ্বীনের) জ্ঞানার্জন অবশ্য কর্তব্য-ফরজ (মুসলিম)।

স্রষ্টা-সৃষ্টি ও বিশ্বজাহান সম্বন্ধে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই প্রতিটি লোক তার নিজের এবং স্রষ্টা সম্বন্ধে জানতে ও বুঝতে পারে এবং সেই সাথে আরও বুঝতে পারে স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক কি আর তার দায়িত্ব ও কর্তব্য কি। এমনিভাবে যখন মানুষ তার স্রষ্টাকে জানতে ও বুঝতে পারে তখন স্রষ্টার দেয়া দায়িত্ব-কর্তব্য পালনও তার জন্য সহজ হয়ে যায়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে ইরশাদ করেনঃ
তবে আল্লাহর উপর ঈমান "তাগুদ"কে অস্বীকার করেই আনতে হবে। সূরা বাকারায় অন্যত্র বলা হয়েছেঃ
وَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَة
(البقرة) الْوُسْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا 
"যে তাগুত (খোদাদ্রোহী শক্তি) কে অস্বীকার করে আল্লাহর উপর ঈমান আনলো সে এমন একটি মজবুত রশি ধারণ করলো যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। (সূরা আল বাকারাঃ ২৫৬)"

এখানে রশি বলতে ইসলামকে বুঝানো হয়েছে। এ আয়াতে কারীমা হতে বুঝা যায়, পৃথিবীতে দুটো শক্তি আছে। একটি তাগুদী বা শয়তানী শক্তি অপরটি আল্লাহর শক্তি। আর যে কান এক শক্তির আনুগত্য অপর শক্তিকে অস্বীকার করেই করতে হবে। এখানেও দেখা যাচ্ছে হক ও বাতিল চেনার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ইল্ম বা জ্ঞান। তাই দ্বীনি ইলম শিখতে হবে এবং তদানুযায়ী আমল করতে হবে।

অন্য হাদীসে বলা হয়েছেঃ
النَّاسُ كُلُّهُمْ مَلْكَاءُ إِلَّا الْعَالِمُوْنَ وَالْعَالِمُونَ كُلُّهُمْ هَلْكَاء إِلَّا الْعَامِلُونَ .
সমস্ত মানুষই জাহান্নামী একমাত্র আলেম বা জ্ঞানী ব্যক্তি ছাড়া, আর সমস্ত আলেমই জাহান্নামী হবে একমাত্র আমলদায় আলেম ছাড়া। (বুখারী) অর্থাৎ শুধু জ্ঞানার্জন করাই মুক্তির পথ নয় সাথে জ্ঞানানুযায়ী আমলের ও প্রয়োজন। আর এ ব্যাপারে অবশ্যই রাব্বুল আলমীনের নিকট জবাবদিহি করতে হবে। এখানে আলেম বলতে মাদ্রাসা থেকে সনদপ্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষিতদেরকে বুঝানো হয়নি। ইসলামের হুকুম আহকাম সম্পর্কে যারা মৌলিক জ্ঞান রাখেন তাদেরকে বুঝানো হয়েছে।

• শিক্ষাবলী:
১। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে।
২। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো যৌবন। তার যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।
৩। ধন সম্পদ আয় এবং ব্যয় আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে হতে হবে এবং আল্লাহর সন্তোষ অর্জন হবে একমাত্র লক্ষ্য।
৪। দ্বীনের যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এবং
৫। জ্ঞানানুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে।

• তথ্যসূত্র:
১। জামেউত তিরমিযি
২। সহীহ আল বুখারী
৩। সাহাবা চরিত-ইসলামিক ফাউন্ডেশন
৪। সুপ্ত শক্তিও ঘুমস্ত প্রতিভা-ডেল কার্ণেগী
৫। সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং-সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী
৬। তাফহীমুল কুরআন-ঐ 
৭। মিশকাত শরীফ-