Close

বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৩

বইনোট | সুবহে সাদিক : আধ্যাত্মিক ও আত্মোন্নয়ন ভাবনা | আল্লামা খুররম জাহ্ মুরাদ

বইনোট  সুবহে সাদিক : আধ্যাত্মিক ও আত্মোন্নয়ন ভাবনা  আল্লামা খুররম জাহ্ মুরাদ
বইনোট 

সুবহে সাদিক : আধ্যাত্মিক ও আত্মোন্নয়ন ভাবনা 
আল্লামা খুররম জাহ্ মুরাদ


লেখক পরিচিতি

আল্লামা খুররম জাহ্ মুরাদ উপমহাদেশের ইসলামি পুনর্জাগরণে এক প্রবাদ পুরুষ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার এই মনীষী ১৯৭০ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, ঢাকা কেন্দ্রের সচিব ছিলেন। তাঁর সাহচর্যে সমৃদ্ধ হয়েছেন ইসলামি পুনর্জাগরণে নিবেদিত অনেক দায়িত্বশীল, যারা আজ এই উপমহাদেশে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ইসলামি জাগরণে ভূমিকা রাখছেন। তাঁর প্রকাশিত বেশ কয়েকটি বই ইতোপূর্বে বাংলায় অনূদিত হয়েছে এবং ব্যাপক পাঠক প্রিয়তা লাভ করেছে। মসজিদুল হারাম কমপ্লেক্স পুননির্মাণে অবদানের জন্য তাঁর সম্মানে হারাম শরিফে একটি গেটের নাম দেয়া হয়েছে ‘বাবে মুরাদ'।

বর্তমান গ্রন্থটি তাঁর ১৯৯৩ সালে যুক্তরাজ্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রদত্ত কতকগুলো ভাষণের সংকলন।

অনুবাদক পরিচিতি

ড. আবু খলদুন আল-মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি, ঢাকার বারডেম একাডেমি থেকে এমফিল এবং মালয়েশিরার ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স মালয়েশিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে এ পর্যন্ত তাঁর বিশটিরও বেশি মৌলিক গবেষণা মূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ইসলাম সম্পর্কে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা সাতটি।

ড. শারমিন ইসলাম মাহমুদ ২০০৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স মালয়েশিয়া থেকে মেডিকেল এথিক্স এ পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্নাস ও মাস্টার্স পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য তিনি দুটো স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। বর্তমানে তিনি নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। Ethics এর উপর তাঁর মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ IIIT, USA থেকে প্রকাশিত হয়েছে।


মূল বই

প্রথম অধ্যায়: আত্মোউন্নয়নের পদ্ধতি

জীবনের লক্ষ্য
জান্নাতের লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ
আপনার মিশন
তাযকিয়া অর্জনের পূর্বশর্ত;
১.তাযকিয়া-আপনার ব্যক্তিগত দায়িত্ব
২.নিখাদ প্রচেষ্টা 
৩.সুদৃঢ় ইচ্ছাশক্তি
৪.আল্লাহ তায়ালার উপর নির্ভরতা 
৫.সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার 
৬.তাযকিয়া-একটি সার্বিক প্রক্রিয়া 
আশীর্বাদ ও সুফল

প্রথম অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

একজন মুসলমানের জন্য জীবনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বেহেশত অর্জন। আর এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী, আজীবন স্থায়ী প্রক্রিয়া যা যে কোনো মুহূর্তেই শুরু করা যায়। এই লক্ষ্য অর্জনের দৃঢ় ইচ্ছাই এই কাজের উপায় বাৎলে দেয় এবং লক্ষ্য অর্জনে গতি সঞ্চয় করে।

আত্মউন্নয়নের লক্ষ্যে আপনার আদর্শ হচ্ছে স্বয়ং রসুল মুহাম্মদ সা.। আর এই লক্ষ্যে এগুতে হলে আপনার দায়িত্বশীল আপনাকেই হতে হবে। আপনার মাঝে প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তি জাগ্রত করতে হবে। আপনার দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে এবং প্রয়োজনীয় চেষ্টা নিয়োজিত করতে হবে। আপনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে জীবনের সব কাজে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। আরও মনে রাখতে হবে যে আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের লক্ষ্যে নিবেদিত প্রতিটি বৈধ কাজই তাযকিয়া অর্জনের মাধ্যম। আল্লাহ তায়ালা তাঁর ক্ষমার গুণে আমাদের ছোট-ছোট ভুলগুলোকে মাফ করে দিতে পারেন এবং আল্লাহ তায়ালার এই দয়া বা ক্ষমালাভ আমাদের বেহেশত গমনের পূর্বশর্ত।

আর যে লোক নিজের খোদার সম্মুখে দাঁড়ানোর ভয় করেছিল এবং প্রবৃত্তির খারাপ কামনা-বাসনা হতে বিরত থেকেছিল, জান্নাতই হবে তার ঠিকানা (সূরা নাযিয়াত, ৭৯ ৪০-৪১)।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাঁর সফল এবং পরিশুদ্ধ বান্দাদের মাঝে শামিল হওয়ার তৌফিক দান করুন কেন না, প্রকৃত পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধি তো আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকেই দান করবেন (যারা এই পবিত্রতা ও শুদ্ধি পায় না) তাদের প্রতি এক বিন্দু পরিমাণ জুলুম করা হয় না (সুরা নিসা, ৪:৪৯ ) ।

আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ এবং তাঁর দয়া যদি তোমাদের উপর না থাকতো তাহলে তোমাদের মধ্যে কেউই পাক পবিত্র হতে পারতো না। বরং আল্লাহ তায়ালাই যাকে চান পরিশুদ্ধ করে দেন। আর আল্লাহ তায়ালাই সর্ব-শ্রোতা সর্বাধিক শুনেন ও সর্বাজ্ঞে (সুরা নূর, ২৪ : ২১)।


দ্বিতীয় অধ্যায়: জিকিরপূর্ণ জীবন

জিকিরের তাৎপর্য জিকিরের অর্থ
জিকিরের পদ্ধতি
সদা-সর্বদা আল্লাহ তায়ালার স্মরণ
জিকিরের ব্যক্তিগত ও সামাজিক কর্মসূচি
জিকিরের ব্যক্তিগত পন্থা
সালাত (নামাজ)
মনস্তাত্বিক ও মানসিক প্রস্তুতি
শারীরিক প্রস্তুতি
সঠিক নিয়মে নামাজ আদায়
তাহাজ্জুদ নামাজ
সিয়াম (রোজা)
আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা পূরণ
ইচ্ছাশক্তি
শয়তান থেকে আত্মরক্ষা
কুরআন তেলাওয়াত/অধ্যয়ন
 কুরআন অধ্যয়নের পদ্ধতি
কুরআন : আপনার নিত্যসাথী
সামষ্টিক জিকিরের পন্থাসমূহ
সত্যপন্থীদের সঙ্গ অনুসন্ধান
মানবতার সামনে সত্যের সাক্ষ্য হওয়া
আপনার জিকিরকে সংগঠিত করুন

দ্বিতীয় অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

আপনার চূড়ান্ত সাফল্য ও মুক্তি নির্ভর করছে আপনার আত্মার পরিশুদ্ধির উপর। আত্মার পরিশুদ্ধির চাবিকাঠি হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার জিকির।
আপনি একদিকে সার্বক্ষণিক এবং অব্যাহতভাবে অন্তরে আল্লাহ তায়ালা সচেতনতা জাগ্রত করে প্রতিদিনের সকল কথা এবং কাজকে নিয়ন্ত্রিত করুন। অন্তরে এই চেতনা বদ্ধমূল করুন যে, আল্লাহ তায়ালা সব সময় আমাদের দেখছেন, সকল কথা কাজ এবং চিন্তার খবর রাখছেন, আমাদের সকল সম্পদ আসলে তাঁরই মালিকানাভুক্ত, তিনি এর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং সর্বোপরি আপনাকে তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে জবাবদিহির জন্য। অপরদিকে আপনি ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক পর্যায়ে কিছু সুনির্দিষ্ট পন্থা অবলম্বন করুন। এই পন্থাগুলোর নিয়মিত সুসংগঠিত এবং আন্তরিক চর্চা ইনশাআল্লাহ আপনাকে সার্বক্ষণিক আল্লাহ তায়ালার স্মরণসম্পন্ন এক জীবন উপহার দেবে ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রায়ই বেশি বেশি করে তার স্মরণ করার তৌফিক দিন। আমাদের অন্তর আল্লাহ তায়ালার স্মরণে প্রশান্তি লাভ করুক।


তৃতীয় অধ্যায়: আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্কিত হওয়া

আল্লাহ তায়ালাকে দৃঢ়ভাবে ধারণের বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তায়ালার শুকুরগুজার হওয়া
আল্লাহ তায়ালার ইবাদত
ইবাদতে আন্তরিকতা 
আল্লাহ তায়ালার প্রেম
আল্লাহ তায়ালার পথে হানিফ হওয়া
জিহাদ-আল্লাহ তায়ালার পথে সংগ্রাম
আল্লাহ তায়ালার রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করার পথে বাধা সমূহ:
ক. অহংকার
খ. মোনাফেকি
গ. হতাশাবাদ
ঘ. অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ
ঙ. জিহবার অপব্যবহার
চ. যৌন লালসা

তৃতীয় অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

সহজ সরল পথে (সিরাতুল মুস্তাকিম) চলার জন্য কুরআন কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে, দৃঢ়ভাবে আল্লাহ তায়ালার রজ্জুকে ধারণ করা।

আল্লাহ তায়ালার রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করার মানে হচ্ছে আপনি আপনার সকল অর্জনের জন্য শুধুমাত্র তাঁরই হামদ ও শুকর করবেন, শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করবেন, পৃথিবীর সবকিছুর চাইতে আল্লাহ তায়ালাকে বেশি ভালোবাসবেন, শুধুমাত্র তাঁর জন্য সংগ্রাম করবেন এবং হানিফ হতে চেষ্টা করবেন।

একই সাথে আল্লাহ তায়ালার রজ্জু ধারণের বাধা গুলোর কথা খেয়াল রাখবেন, এগুলো হচ্ছে গর্ব, শঠতা, হতাশা, অনিয়ন্ত্রিত রাগ, জিহ্বার (কথা) অসংযত ব্যবহার এবং অননুমোদিত যৌন লালসা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেদায়াতের পথে চালিত করুন, কারণ তিনি যাকেই চান তাকেই হেদায়াতের পথে চালিত করেন ( সুরা ইউনুস, ১০ : ২৫)।


চতুর্থ অধ্যায়: আল্লাহর রসুলের সা. সাথে সম্পর্কিত হওয়া

মু'মিনের জীবনে সুন্নাহর গুরুত্ব
রসুল সা.-এর মিশন
সুন্নাহ অধ্যয়নে দিক-নির্দেশনা
পশ্চিমা সমাজের প্রেক্ষাপটে সুন্নাহ
সুন্নাহ শব্দের প্রকৃত অর্থ
আপনার মিশন

চতুর্থ অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

আমাদের জীবনে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে রসুলকে সা. সবার আগে এবং সবার উপরে স্থান দিতে হবে। আমাদের সকল ভালোবাসা সবার উপরে আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রসুলের জন্য নির্দিষ্ট রাখতে হবে।

মানুষের সামনে আল্লাহ তায়ালার খলিফা হিসেবে তাঁর শেষ নবির সা. বাণী পৌঁছে দেওয়া আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। আমাদের কথা, কাজ, কর্তব্যনিষ্ঠা, দয়া ও ভালোবাসার গুণের মাধ্যমে আমাদের সকল সহকর্মী, প্রতিবেশীকে বুঝাতে হবে ইসলাম কি? এবং রসুল সা.-এর মিশন কি?

অবএব এই কাজে রসুল সা.-এর দয়ার গুণ অনুসরণে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাঁর গুণ অর্জনের মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত সুন্নাহ্ শেখাতে সক্ষম হবো। তখনই সম্ভবত আমাদের এই পৃথিবীর জীবন শুধুমাত্র মুসলমান সমাজের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য কল্যাণকর হয়ে দেখা দিবে।


পঞ্চম অধ্যায়: আল্লাহ তায়ালার পথে ব্যয়

দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয়
ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ ব্যয়
ছোট-ছোট দান
দানের ধরন
দুনিয়াপ্রীতি
অন্যদের ক্ষমা করা

পঞ্চম অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

আপনি যাই খরচ করতে পারেন তা খরচ করুন আপনার পরিবারের ভরণপোষণে এবং দরিদ্রদের কল্যাণে। ইসলামের প্রয়োজনে দান করতে আরও উদার ও মুক্তহস্ত হোন। মনে রাখবেন ইসলামের পথে খরচের এখনই সময়। আপনার হাতের সব ধরনের সম্পদের ব্যবহার করুন; আপনার সময়, মনোযোগ, হৃদয়, মন, বাচনভঙ্গি, লেখনি, যুক্তি, বুদ্ধি, যা কিছু আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দিয়েছেন তা তাঁরই দ্বীন প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত করুন। দুনিয়ার প্রেম যেন আপানাকে গ্রাস না করে, আল্লাহ তায়ালার দয়া ও ভালোবাসা পেতে চাইলে মানুষকে ক্ষমা করতে শিখুন, তাদের প্রতি দয়ালু হোন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হতে নয় বরং দুনিয়াপ্রীতি থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করুন। তিনি আমাদের যে নেয়ামত বা সম্পদ দিয়েছেন তা তাঁর পথে ব্যয় করার তৌফিক দিন।

ষষ্ঠ অধ্যায়: আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির সাথে সম্পর্ক

আমলের রেজিস্ট্রার
পরিবারের প্রতি দায়িত্ব
সন্তানের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য
পিতা মাতার প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য
মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য
মালিক ও শ্রমিকের পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য প্রতিবেশীদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য
জীবজন্তুর অধিকার

ষষ্ঠ অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

সকল সৃষ্টজীব আল্লাহ তায়ালার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালা তাদের ভালাবাসেন যারা তাঁর পরিবারের সদস্যদের দয়া ও সেবা করেন। অন্যের প্রতি মামাদের দায়িত্ব বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই জন্য যে, ব্যক্তির হক নষ্ট করার কোনো ক্ষমা নেই।

আপনার নিজের প্রয়োজন পূরণের পর আপনার প্রথম দায়িত্ব আপনার পরিবারের প্রতি। বস্তুত আল্লাহ তায়ালার পর আপনার উপর সবচাইতে বড় দায়িত্ব আপনার পিতা-মাতার প্রতি। আপনার স্ত্রী/স্বামীর প্রতি আপনার দায়িত্ব পূরণ করুন এবং আবেগ ও ভালোবাসা দিয়ে আপনার সন্তানদের যত্ন নিন। আপনার পার্শ্ববর্তী মুসলিমের প্রতি দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে মনে রাখবেন যে, ইমানের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ভালোবাসা । উদ্যোক্তা (মালিক) হিসেবে সব সময় মনে রাখবেন যে আপনার অধীনস্থ কর্মচারীর উপর আপনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। একইভাবে কর্মচারী (শ্রমিক) হিসেবেও আপনার দায়িত্ব হচ্ছে আপনার কাজ দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে করা।

আখেরাতে আপনার ভাগ্য আরও নির্ধারিত হবে এটার ভিত্তিতে যে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে আপনার প্রতিবেশীর উপর দায়িত্ব আপনি কীভাবে পালন করেছেন। রসুল সা. অমুসলিমদের প্রয়োজনের দিকে সবসময় বিশেষ খেয়াল রাখতেন, এমনকি মুসলিম সমাজের দারিদ্র সত্ত্বেও।

জীব-জানোয়ারেরও অধিকার আছে, কারণ তারাও আল্লাহ তায়ালার পরিবারভুক্ত। আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করুন সেই সব প্রাণীর স্বার্থের বিষয়ে যারা কথা বলতে পারে না। তাদের উপর আরোহন করুন যখন তারা সুস্থ এবং তাদের গোশতও খাবেন যখন তারা সুস্থ্য। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনে সক্ষম ও সচেতন করুন।

সপ্তম অধ্যায়: আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাৎ

জীবনের লক্ষ্য
পরকালের বাস্তবতা
মৃত্যু নিশ্চিত ও অনিবার্য 
মানুষের পরকাল ভুলে যাওয়ার প্রবণতা
আল্লাহ তায়ালার দয়া অন্বেষণ
আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা অনুসন্ধান
আত্মসমালোচনা
মৃত্যুভয় জয় করা
 
সপ্তম অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ

আমাদের জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা। এটা হচ্ছে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা আমাদের আজই এবং এখনই নিতে হবে। এই একটি সিদ্ধান্ত আমাদের গোটা জীবনের চলার দিক ও লক্ষ্যের নির্দেশনা দেবে। যে পথের কথা বলা হয়েছে কুরআনে, যে পথে চলার উদাহরণ রেখে গেছেন মহানবি হজরত মুহাম্মদ সা.।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের যে জ্ঞান দিয়ে ধন্য করেছেন তাই হবে আমাদের এ পথে চলার সহায়ক। আমাদের মিশন যখন সফল হবে তখন আমরা দেখবো আমাদের দোয়ার জবাব আল্লাহ তায়ালা দিচ্ছেন, আমাদের প্রয়োজনে তাঁর সাহায্য ও মদদ পাচ্ছি ঠিক যেমনটি তিনি বলেছেন :

হে প্রশান্ত আত্মা, তোমার প্রভুর দিকে প্রত্যাবর্তন করো সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। আমার অনুগত বান্দাদের মধ্যে শামিল হও আর আমার বেহেশতে প্রবেশ করো (সুরা ফজর, ৮৯ : ২৭-৩০)।



(পূর্ণাঙ্গ নোট চলমান)