Close

শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বইনোট: ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী || সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী রাহি.

ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী

লেখক: সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী রাহি.
অনুবাদক: মাওলানা আব্দুল মান্নান তালিব

প্রকাশকের কথা :
কোন উদ্দেশ্য, কোন আন্দোলন, কোন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ সফল হতে হলে সে আন্দোলনের সৈনিকদের বিশেষ কতগুলো গুণ থাকা দরকার। যথা: 
১. সুন্দর, বলিষ্ঠ, উন্নত আর উজ্জল চরিত্রের অধিকারী হওয়া।
২. আন্দোলন ও ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা লাভ।
৩. আখেরাতে আল্লাহরসন্তুষ্টি লাভ।

★★মূল বইটি দু'ভাগে বিভক্ত-
০১. ভূমিকা ও 
০২. মূল বক্তব্য।

★বইয়ের ভূমিকাকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

০১. হতাশার দিক :
১) আগ্রহ, উদ্যোগ ও যোগ্যতার অভাব
২) প্রভাবশালী অংশ সমাজ ভাঙ্গনে লিপ্ত
৩) সমাজ ভাঙ্গনে বৃহত্তম শক্তি সরকার।

০২. আশার দিক :
১) সমাজে কিছু সৎ ও যোগ্যলোক রয়েছে
২) সামষ্টিক ভাবে লোকজন অসৎ প্রবণ নয়
৩) ইসলাম বিরোধী শক্তির দুটি জিনিসের অভাব-
ক) চারিত্রিক শক্তি
খ) ঐক্যের শক্তি।

০৩. করণীয় কাজ সমূহ :
১) আবেগ বর্জিত ধীর ও সুস্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে
২) হঠাৎ ফল পাওয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে
৩) সুশিক্ষীত কর্মী বাহিনী গঠন করতে হবে
৪) ব্যক্তি গঠন করতে হবে।

★★ মূল বক্তব্য কে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে :

০১. ব্যক্তিগত গুণাবলি সমূহ :

১) ইসলামের যথার্থ জ্ঞান
২) ইসলামের প্রতি অবিচল বিশ্বাস
৩) চরিত্র ও কর্ম
৪) দ্বীন হচ্ছে জীবন উদ্দেশ্য।

০২. দলীয় গুণাবলি সমূহ : 

১) ভ্রাতৃত্ব ও ভালবাসা
২) পারস্পরিক পরামর্শ
৩) সংগঠন ও শৃঙ্খলা
৪) সংস্কারের উদ্দেশ্যে সমালোচনা।

০৩. পূর্ণতা দানকারীর গুণাবলি সমূহ :
১) আল্লাহ সাথে সম্পর্ক ও আন্তরিকতা
২) আখেরাতের চিন্তা
৩) চরিত্র মাধুর্য

০৪. মৌলিক ও অসৎ গুণাবলি সমূহ :
১) গর্ব ও অহংকার
২) প্রদর্শনেচ্ছা
৩) ত্রুটিপূর্ণ নিয়ত।

০৫. মানবিক দুর্বলতা সমূহ :
১) আত্মপূজা
২) আত্মপ্রীতি
৩) হিংসা ও বিদ্বেষ
৪) কুধারণা
৫) গীবত
৬) চোগলখোরী
৭) কানাকানি ও ফিসফিসানী
৮) মেজাজের ভারসাম্যহীনতা
৯) একগুঁয়েমী
১০) একদেশদর্শীতা
১১) সামষ্টিক ভারসাম্যহীনতা
১২) সংকীর্ণমনতা
১৩) দুর্বল সংকল্প।

★ গর্ব অহংকার থেকে বাঁচার উপায় সমূহ :
১) বন্দেগীর অনুভূতি
২) আত্মবিচার
৩) মহৎ ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি
৪) দলগত প্রচেষ্টা।

★★কয়েকটি বিষয়ে বইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা :

★ চরিত্র মাধুর্যের মূল বিষয়বস্তু :
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হতে হবে উদার হৃদয় ও বিপুল হিম্মতের অধিকারী। সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতিশীল ও মানবতা দরদী। তাদের হতে হবে ভদ্র ও কোমল স্বভাব সম্পন্ন, আত্মনির্ভরশীল ও কষ্ট সহিষ্ণু। তাদের দ্বারা অন্যদের উপকার বিনে ক্ষতি হবে এমন ধারণাও কেউ করতে পারবে না। তারা নিজের প্রাণের চাইতে কমের উপর সন্তুষ্ট থাকবে ও অন্যকে তার প্রাপ্যের চাইতে বেশী দিবে। তারা নিজের দোষত্রুটি স্বীকার করবে ও অন্যের গুণাবলীর কদর করবে।
তারা অন্যের দুর্বলতার প্রতি নজর না দেবার মতো বিরাট হৃদয়পটের অধিকারী হবে, অন্যের দোষত্রুটি মাফ করে দেবে এবং নিজের জন্যে কারোর উপর প্রতিশোধ নেবে না। তারা অন্যের সেবা গ্রহন করে নয় বরং অন্যকে সেবা করে আনন্দিত হবে। তারা কোন প্রকার প্রসংশার অপেক্ষা না করে এবং কোন প্রকার নিন্দাবাদের তোয়াক্কা না করে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাবে। আল্লাহ ছাড়া কারো পুরষ্কারের প্রতি দৃষ্টি দেবে না। ধন-সম্পদের বিনিময়ে তাদেরকে ক্রয় করা যাবে না কিন্তু সত্য ন্যায়ের সামনে তারা নির্দ্বিধায় ঝুকে পড়বে। তাদের শত্রুরাও তাদের উপর বিশ্বাস রাখবে যে, কোন অবস্থাই তারা ভদ্রতা ও ন্যায়নীতি বিরোধী কোন কাজ করবে না। এ চারিত্রিক গুণাবলী মানুষের মন জয় করে নেয়। এগুলো তলোয়ারের চাইতেও ধারালো এবং হীরা মনি মুক্তার চাইতেও মূল্যবান। যে এহেন চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনকারী সে তার চারপাশের জনবসতির উপর বিজয় লাভ করে।

★ "দ্বীন হচ্ছে জীবন উদ্দেশ্য" এর ব্যাখ্যা :
সমাজ সংস্কার ও পরিগঠনে ব্রতী কর্মীদের মধ্যে খোদার বাণী বুলন্দ করা এবং দ্বীনের প্রতিষ্ঠা নিছক তাদের জীবনের একটি আকাঙ্খার পর্যায় ভুক্ত হবে না বরং এটিকে তাদের জীবনোদ্দেশ্যে পরিণত করতে হবে। এক ধরনের লোক দ্বীন সম্পর্কে অবগত হয়, তার উপর ঈমান রাখে, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে কিন্তু তার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম তাদের জীবনের লক্ষ্য বিবেচিত হয় না বরং সততা ও সৎকর্ম করে এবং এই সংগে নিজেদের দুনিয়ার কাজ কারবারে লিপ্ত থাকে। নিঃসন্দেহে এরা সৎ লোক। ইসলামী জীবন ব্যবস্থা কার্যত প্রতিষ্ঠিত থাকলে এরা তার ভালো নাগরিক হতে পারে। কিন্তু যেখানে জাহেলী জীবনব্যবস্থা চতুর্দিক আচ্ছন্ন করে রাখে এবং তাকে সরিয়ে তদস্থলে ইসলামী জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার প্রশ্ন দেখা দেয় সেখানে নিছক এ ধরনের সৎ লোকদের উপস্থিতি কোন কাজে আসে না বরং সেখানে এমন সব লোক প্রয়োজন হয় যাদের জীবনোদ্দেশ্য রুপে এ কাজ বিবেচিত হয়। দুনিয়ার অন্যান্য কাজ তারা অবশ্যই করবে কিন্তু তাদের জীবন একমাত্র এ উদ্দেশ্যের চারদিকে আবর্তন করবে। এ উদ্দেশ্য সম্পাদন করার জন্য তারা হবে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এ জন্য নিজেদের সময় সামর্থ ধন-মাল ও দেহ-প্রাণের সকল শক্তি এবং মন- মস্তিষ্কের সকল যোগ্যতা ব্যয় করতে তারা প্রস্তুত হবে। এমনকি যদি জীবন উৎসর্গ করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তাতেও তারা পিছপা হবে না। এ ধরনের লোকেরাই জাহেলিয়াতের আগাছা কেটে ইসলামের পথ পরিষ্কার করতে পারে। দ্বীনের সঠিক নির্মূল জ্ঞান, তার প্রতি অটল বিশ্বাস, সেই অনুযায়ী চরিত্র গঠন এবং তার প্রতিষ্ঠাকে জীবনোদ্দেশ্য পরিণত করা এগুলো এমনসব মৌলিক গুণ যেগুলো ব্যক্তিগত ভাবে অপরিসীম। অর্থাৎ এ গুণাবলীর অধিকারী ব্যক্তিবর্গের সমাবেশ ছাড়া এ কাজ সম্পাদনের কল্পনাই করা যেতে পারে না। বলাবাহুল্য, এহেন ব্যক্তিরা যদি সত্যিই কিছু করতে চায় তাহলে তাদের একটি দলভুক্ত হয়ে এ কাজ করা অপরিহার্য। তারা যে কোন দলভুক্ত হোক এবং যে কোন নামে কাজ করুক না কেন, তাতে কিছু আসে যায় না। প্রত্যেক বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তি জানে, নিছক ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় সমাজ ব্যবস্থায় কোন পরিবর্তন আনা যেত পারে না। এজন্য বিক্ষিপ্ত প্রচেষ্টা নয়, সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

★ দূর্বল সংকল্প :
দুর্বল সংকল্পের কারণে মানুষ প্রথম দিকে কাজে ফাঁকি দিতে তাকে। দায়িত্ব গ্রহণ করতে ইতস্তত করে। উদ্দেশ্য সম্পাদনের জন্য সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে পিছপা হয়। যে কাজকে সে নিজের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গন্য করে এগিয়ে এসেছিল দুনিয়ার প্রত্যেকটি কাজকে তার উপর অগ্রাধিকার দিতে থাকে। তার সময়, শ্রম ও সম্পদের মধ্যে তার ঐ তথাকথিত জীবন উদ্দেশ্যের অংশ হ্রাস পেতে থাকে এবং যে দলকে সত্য মনে করে সংযুক্ত হয়েছিল তার সাথেও সে নিছক যান্ত্রিক ও নিয়মানুগ সম্পর্ক কায়েম রাখে। ঐ দলের ভালমন্দের সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকে না এবং তার বিভিন্ন বিষয়ে কোন প্রকার আগ্রহ প্রকাশ করে না।

★ ধৈর্য :
ক) তাড়াহুড়া না করা, নিজের প্রচেষ্টার তড়িৎ ফল লাভের জন্য অস্থির না হওয়া এবং বিলম্ব দেখে হিম্মত না হারানো।
খ) তিক্ত স্বভাব, দুর্বল মত ও সংকল্পহীনতা রোগে আক্রান্ত না হওয়া
গ) বাধা বিপত্তির বিরোচিত মোকাবিলা করা এবং শান্ত চিত্তে লক্ষ্য অর্জনের পথে যাবতীয় দুঃখ কষ্ট বরদাশত করা।
ঘ) দুঃখ বেদনায় ভারাক্রান্ত ও ক্রোধান্বিত না হওয়া এবং সহিষ্ণু হওয়া।
ঙ) সকল প্রকার ভয় ভীতি ও লোভ লালসার মোকাবিলায় সঠিক পথে অবিচল থাকা, শয়তানের উৎসাহ প্রদান ও নফসের খায়েসের বিপক্ষে কর্তব্য সম্পাদন করা।

★ চরিত্র ও কর্ম :
চরিত্র ও কর্ম হচ্ছে কথা অনুযায়ী কাজ। যে বস্তুকে সে সত্য মনে করে সে তার অনুসরণ করে। যাকে বাতিল বলে গণ্য করে তা থেকে দূরে সরে থাকে। যাকে নিজের দ্বীন ঘোষণা করে তাকে নিজের চরিত্র ও কর্মের দ্বীনে পরিণত করে। সকল প্রকার ভয়-ভীতি, লোভ-লালসা, বিরোধীতা ও সকল প্রকার প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সত্য পথে অবিচল থাকে।

★ প্রজ্ঞা :
ব্যক্তিগত গুণাবলীর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ইসলামের যথার্থ জ্ঞান। (যে ব্যক্তি ইসলামী জীবন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায় তাকে সর্ব প্রথম যে জিনিসটি সে কায়েম করতে চায় তা জানতে ও বুঝতে হবে)। এ কাজের জন্য ইসলামের নিছক সংক্ষিপ্ত জ্ঞান যথেষ্ট নয় বরং কম বশেী বিস্তারিত জ্ঞানের প্রয়োজন। এর স্বল্পতা ও বিপুলতা মানুষের যোগ্যতার উপর নির্ভরশীল। এজন্য এ পথের প্রত্যেকটি পথিককে এবং আন্দোলনের প্রত্যেকটি কর্মীকে মুফতি বা মুজতাহিদ হতে হবে এমন কোন কথা অবশ্য নেই তবে তাদের প্রত্যেককে অবশ্যই ইসলামী আকিদা বিশ্বাসকে জাহেলী চিন্তা-কল্পনা ও ইসলামী কর্মপদ্ধতিকে জাহেলিয়াতের নীতি-পদ্ধতি থেকে আলাদা করে জানতে হবে এবং জীবনের বিভিন্ন বিভাগে ইসলাম মানুষকে কি পথ দেখিয়েছে সে সম্পর্কে অবগত হবে হবে। এ জ্ঞান ও অবগতি ছাড়া মানুষ নিজে সঠিক পথে চলতে পারে না, অন্যকেও পথ দেখাতে পারে না এবং সমাজ পরিগঠনের জন্য যথার্থ পথে কোন কাজ করতেও সক্ষম হয় না। সাধারণ কর্মীদের মধ্যে এ জ্ঞান এমন পর্যায়ে থাকতে হবে যার ফলে তারা গ্রাম ও শহরের লোকদেরকে সহজ সরল ভাবে দ্বীনের কথা বুঝাতে সক্ষম হবে। কিন্তু উন্নত বুদ্ধিবৃত্তির অধিকারী কর্মীদের মধ্যে এ জ্ঞান অধিক মাত্রায় থাকতে হবে। তাদের বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর উপর প্রভাব বিস্তার করতে হবে। শিক্ষিত লোকদের সকল সন্দেহ সংশয় নিরসন করতে হবে। বিরুদ্ধবাদীদের প্রশ্নের যুক্তিপূর্ণ ও সন্তোষজনক জবাব দিতে হবে। ইসলামের আলোকে জীবনের বিভিন্ন সমস্যাবলীর সমাধান করতে হবে। ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে শিক্ষা ও শিল্পকে নতুন ছাঁচে ঢালাই করে বিন্যস্ত করতে হবে। ইসলামী আকিদা ও চিন্তার ভিত্তির উপর একটি নতুন সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রাসাদ গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক চিন্তা ও কর্মের ত্রুটিপূর্ণ অংশকে ত্রুটিহীন অংশ থেকে আলাদা করার মত যোগ্যতা তাদের মধ্যে থাকতে হবে। এই সঙ্গে যা কিছু ভাঙ্গার তাকে ভেঙ্গে ফেলে তদস্থলে উন্নততর বস্তু গড়ার এবং যা কিছু রাখার তাকে কায়েম রেখে একটি উত্তম ও উন্নততর ব্যবস্থায় তাকে ব্যবহার করার মতো গঠনমূলক যোগ্যতা ও শক্তির অধিকারী তাকে হতে হবে।

★ চোগলখোরী :
গীবত যে আগুন জ্বালায় চোগলখোরী তাকে বিস্তৃত করে চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয়। স্বার্থবাদিতার প্রেরণাই হয় এর মধ্যে আসল কার্যকর শক্তি। চোগলখোর ব্যক্তি কারুর কল্যাণকামী হতে পারে না। নিন্দিত দুজনের কারুর কল্যাণ তার অভিস্পীত হয় না। সে দুজনেরই বন্ধু সাজে কিন্তু অমঙ্গল চায়। তাই সে মনযোগ দিয়ে দু'জনেরই কথা শুনে, কারোর প্রতিবাদ করে না। তারপর বন্ধুর নিকট এ খবর পৌঁছে দেয়। এভাবে যে আগুন এক জায়গায় লেগেছিল তাকে অন্য জায়গায় লাগাতেও সাহায্য করে। ইসলামী শরীয়তে এ কাজকে হারাম গণ্য করা হয়েছে।

★ "আখেরাতের চিন্তা" এর ব্যাখ্যা :
যারা মুমিন তারা দুনিয়ার সমস্ত কাজ আখেরাতের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়েই করে। দুনিয়া মুমিনের কর্মস্থল এবং সবকিছু তাকে এখানেই করতে হয়। কিন্তু এতদসত্বেও সে দুনিয়ার জন্যে কাজ করে না বরং আখেরাতের জন্য করে এবং দুনিয়ার ফলাফলের দিকে লক্ষ্য থাকে না বরং তার লক্ষ্য থাকে আখেরাতের ফলাফলের প্রতি। আখেরাতে অকল্যাণ বয়ে আনে এমন সকল কাজ থেকে মুমিন সর্বদা দূরে থাকে। মুমিন তার জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত আখেরাতের জবাবদিহীতার অনুভূতি নিয়ে অতিবাহিত করেন। কারণ আখেরাতের শান্তি ও পুরস্কার দুনিয়ার কাজের উপর ভিত্তি করেই দেয়া হবে। আখেরাতে আল্লাহই একমাত্র বিচারক থাকবেন। আল্লাহকে ভয় করা, তার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা আখেরাতের উপলব্ধির উপর নির্ভর করে। তাই বলা যায় আখেরাতের চিন্তা মুমিনের নেক আমল বৃদ্ধির টনিক হিসাবে কাজ করে।

সংকলনে:
আরমানের খেরোখাতা